
মিরসরাইয়ে মৌসুমের প্রথম কালবৈশাখী ঝড়ে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় গাছের ডাল ভেঙে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। ফলে বেশকিছু স্থানে বিদুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
সোমবার (২১ এপ্রিল) সকালে কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় মোমবাতির আলোয় পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থীরা।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বেশকিছু বসতঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। গাছ উপড়ে মারা গেছে কৃষকের গরু। ঝড়ে উপজেলার ইছাখালী ও মঘাদিয়া ইউনিয়নের হাসিমনগর এলাকায় বসতঘর এবং দোকানপাট বেশি ক্ষতি হয়েছে। হাসিমনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে তারেক স্টোর নামে একটি দোকানের ওপর গাছ পড়ে দোকান ভেঙে গেছে।
দিনের প্রথমার্ধে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কে গাছ পড়ে যানচলাচল সাময়িক বন্ধ হয়ে পড়ে। বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের উপর বড় বড় গাছ ভেঙে পড়ায় ২৫টি সিমেন্ট ও কাঠের বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে।
ইছাখালী ইউনিয়নের চরশরত উচ্চ বিদ্যালয়ের টিনের ছাউনি উড়ে যাওয়ায় পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। একই ইউনিয়নের আবাসন প্রকল্পের কয়েকটি বসতঘরের ছাউনি উড়ে গেছে। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা কেন্দ্রে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় পরীক্ষার্থীদের মোমবাতি জ্বালিয়ে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে দেখা গেছে।
বেশির ভাগ স্থানে গাছ পড়ে রাস্তা বন্ধ রয়েছে এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষেরা। এছাড়াও কালবৈশাখী ঝড়ে অনেকের বসতঘরের ছাল উড়ে গেছে।
মঘাদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলা উদ্দিন বলেন, ‘স্বল্প সময়ের ঝড়ে এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে বাড়িঘর-গাছপালা ভেঙে পড়েছে সব এলাকায়। এ কারণে অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। হাসিমনগর এলাকায় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছ পড়ে কৃষক ওহিদুর রহমানের একটি গরু মারা গেছে।’
চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩-এর মিরসরাই জোনাল অফিসের ডিজিএম আদনান আহম্মদ চৌধুরী বলেন, ‘সোমবার ভোরের ঝড়ে মিরসরাই জোনাল অফিসের অধীনে আবুরহাট, মঘাদিয়া, হাশিমনগর, বানাতলী, আবুতোরাব বাজার, ইছাখালী এলাকায় সিমেন্ট ও কাঠের ১৩টি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ে গেছে। বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।’
চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩-এর বারইয়ারহাট জোনাল অফিসের ডিজিএম হেদায়েত উল্ল্যাহ বলেন, ‘কালবৈশাখী ঝড়ে বারইয়ারহাট জোনাল অফিসের অধীনে ১২টি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গেছে। অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। সোমবার সন্ধ্যার মধ্যে বেশকিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা গেলেও পুরো লাইনে বিদ্যুৎ স্বাভাবিক হতে মঙ্গলবার পর্যন্ত সময় লাগবে।’
মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহফুজা জেরিন বলেন, ‘এখনো বসতঘরের ক্ষতিগ্রস্তদের বিস্তারিত তথ্য পাইনি। খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো আবেদন করলে তাদের সহায়তা করা হবে। তবে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।