ঢাকা, শুক্রবার, ৯ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
এক যুগ ধরে গুম:ওয়ারেন্ট নিয়ে বিএনপি নেতার বাসায় যাওয়া পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার
প্রাইমএশিয়ার পারভেজ হত্যা: শিক্ষার্থী ফারিয়া হক টিনা গ্রেফতার
ঝিকরগাছায় দাদার ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা কিশোরী, ধামাচাপার চেষ্টায় প্রভাবশালীরা
খুলনায় দেশ সংযোগ পত্রিকা অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ
পার্বতীপুরের হরিরামপুর ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী
হোটেল আমারিতে পুলিশ-ডিএনসির যৌথ অভিযান চলছে
পুলিশ সার্জেন্টের সঙ্গে দুর্ব্যবহার : দুই যুবকের কারাদণ্ড
আবদুল হামিদের দেশত্যাগ: তদন্ত কমিটি গঠন, এবার কিশোরগঞ্জের এসপি প্রত্যাহার
নোবিপ্রবি’তে ভর্তিচ্ছু সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ও খাবারের ব্যবস্থা
জীবননগরে আবারো মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত-১
জুয়া ও মাদক প্রতিরোধে ওসির সাথে নান্দাইল নাগরিক ফোরামের মতবিনিময়
জীবননগর মুক্তমঞ্চে দিনব্যাপী ইসলামী ছাত্র শিবিরের সদস্য সংগ্রহ
চট্টগ্রাম বে- টার্মিনালে ২৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে:বিডা’র চেয়ারম্যান
বর্ণিল আয়োজেন আত্রাইয়ের পতিসরে পালিত হচ্ছে বিশ্বকবির ১৬৪ তম জন্মোৎসব
আবদুল হামিদের দেশত্যাগ, তিন পুলিশ প্রত্যাহার-বরখাস্ত

রূপগঞ্জে রংধনুর রফিকের নির্দেশে শিশু হত্যার অভিযোগ

নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জে নামমাত্র মূল্যে বসতভিটা বিক্রি না করায় শিশুহত্যার অভিযোগ উঠেছে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও তার ভাই মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে। ওসমান গণি স্বাধীন নামে ৯ বছর বয়সী ওইশিশুর পরিবার বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) জাতীয়প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে আয়োজিতএক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করে।

পরিবারের
দাবি, শিশুটিকে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ যাতে শনাক্ত নাহয় এজন্য থেঁতলে দেওয়া হয় তার মুখ, এসিডে ঝলসে দেওয়া হয় শরীর। এমনকি লাশ গুম করতে হত্যার পর মরদেহ ফেলেদেওয়া হয় বালু নদীতে।

হত্যাকারীরা প্রভাবশালী জানিয়ে শিশুর বাবা দাবি করেন, রফিক এলাকায় প্রভাবশালী। তার রয়েছে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী। তার কারণে হত্যামামলা না নিয়ে একটিঅপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ। এঅবস্থায় হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে আহাজারি করে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপকামনা করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নিহত শিশু স্বাধীনেরবাবা শাহিনুর রহমান শাহীন, মা উম্মে হানিমুন্নী ও দাদা রেজাউল
করিম। তারা নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া গ্রামের বাসিন্দা।

বাবাশাহিনুর রহমান শাহীন বলেন, গত ৪ ডিসেম্বর ইদারকান্দি গ্রামে নির্মাণাধীন ব্রিজের নিচে বালু নদী থেকে ৯ বছরের একটি শিশুর লাশ উদ্ধার করাহয়। আমি সেই শিশুটিরহতভাগ্য পিতা। আমার অবুঝ সন্তানেরমৃত্যুটি স্বাভাবিক ছিল না, তাকে নৃশংসভাবে খুন করে লাশগুম করার উদ্দেশে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।’ প্রভাবশালীর নির্দেশেশিশু স্বাধীনকে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমার সন্তানের হত্যাকারী আমাদের ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও রংধনু গ্রুপের
মালিক রফিকুল ইসলাম ওরফে আন্ডা রফিকও তার ভাই মিজানুররহমান ওরফে কুত্তা মিজান।তারা এত প্রভাবশালী যে, সন্তানকে কবর দেওয়ার পরআমরা বাড়িতে থাকতে পারি না। আরবিচার কিভাবে পাব?’

তাদের লোকজন আমার সন্তানের হত্যাকান্ড নিয়ে কথা বললে আমাদেরকে ও মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাড়িতে পাহারা বসিয়েছে।

নিজেদের জীবন বাঁচাতে বাড়ি থেকে আমরা পালিয়ে বেড়াচ্ছি। সন্তান হত্যার বিচার পেতে আমরা মামলা ও করতে পারিনি, থানা পুলিশ তাদেরবিরুদ্ধে মামলা না দিয়ে অপমৃত্যুর মামলার পরামর্শ দেয়।’

হত্যাকাণ্ডের কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম গত ২ মাস আগে আমাদের বাড়ি নামমাত্র দামে কিনতে তার বোনকে পাঠান।তার সঙ্গে আরেক জন মহিলাও ছিল। তারা আমাদের বাড়িটি রফিকুল ইসলাম কিনতে চান বলে জানালে আমার বাবা রেজাউল করিম বলেন, বাড়ি বিক্রি করলে আমরা থাকবো কই। তারপরও যদিকখনো বিক্রি করি আমি নিজেই রফিক সাহেবের বাড়িতে গিয়ে দিয়ে আসব, তোমাদের আর কষ্ট করেআসতে হবে না।’

বাড়ি বিক্রি করতে রাজি নাহওয়ার পর থেকে রফিকুল ইসলাম ক্যাডার বাহিনী দিয়ে হামলা, নির্যাতন, নিপীড়ন, চাঁদাবাজি শুরু করেন বলেজানান তিনি। তিনি বলেন, ‘তারা একাধিক বার আমাদের বাড়িতে হামলা করেছে। আমাদের দোকানে দুই দফা হামলাও আমার বাবা এবংআমার ওপর হামলা করে।পরে আমার নাওড়া পাড়ার মোদি দোকানটি বন্ধ করে দিয়েছে।তারপরও আমরা বাড়িটি বিক্রি করতে রাজি হয়নি।’

শাহীন বলেন, ‘আমার সন্তানকে হত্যার এক সপ্তাহ আগে রফিকুলের ভাইমিজানুর রহমান উচিত শিক্ষা দিবেন বলে বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে যান। ঠিক এক সপ্তাহ পরে আমার সন্তানটি নিখোঁজহয়। এরপর আমরা স্বাধীনের বীভৎস লাশ পাই। আমাদেরবা ড়িটি রফিকুল ইসলামকে দিয়ে দিলে আমারশিশু সন্তানটির এমন করুণ পরিণতিহত না। রফিকুল ইসলাম আমার জায়গার জন্য এমন জঘন্য কাজ করবেন, সেটা বুঝতে পারলে অনেক আগেই বাড়িটা দিয়ে দিতাম।’

তিনিআরো বলেন, ‘শিশু সন্তানের লাশ যাতে শনাক্ত না করা যায়, সেজন্য পুরো মুখ থেঁতলে দেওয়া হয়েছে। পুরো শরীর এসিডজাতীয় কিছু দিয়ে ঝলসে দেওয়া হয়েছে। আমরা পরনের প্যান্ট দেখে ওসমান গণিকে শনাক্ত করি। গত ১ডিসেম্বর সন্ধ্যায় আমার স্বাধীন নিখোঁজ হলে আত্মীয় স্বজনরা মিলে অনেক খোঁজা খুজির পরও তাকে পাইনি। এর পররাত আটটার দিকে তার সন্ধান চেয়ে মাইকিং শুরু করলে রফিকুল ইসলামের লোকজন বাধা দেয়। তারাবলে, রফিকুল ইসলামের নির্দেশ এ বিষয়ে কোন মাইকিং করা যাবে না।’

এছাড়া রফিকুল ইসলামের লোকজন লাশ উদ্ধারের আগে পর্যন্ত আমাদেরকে বিভিন্নভাবে বিভ্রান্ত করতে থাকে বলেজানান শাহীন। ‘একবার বলে অমুক জায়গায় দেখছি, আবার বলে অন্য জায়গায় দেখেছি। এখন তারা সব জায়গায় বলে বেড়াচ্ছে আমারসুস্থ-সবল সন্তানটি নাকি প্রতিবন্ধী ছিল। সে পানিতেপড়ে মরে গেছে।’

শেয়ার করুনঃ