ঝালকাঠি প্রতিনিধি: ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর–কাঁঠালিয়া) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর অভ্যন্তরীণ কোন্দল নতুন করে তীব্র আকার ধারণ করেছে। শনিবার রাতে সংঘটিত এক হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দলীয় দুই মনোনয়নপ্রত্যাশীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। হামলায় অন্তত ১০ জন আহত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুরে ঝালকাঠি ও রাজাপুরে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেন দুই পক্ষ।
দুপুরে ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ও সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা গোলাম আজম সৈকত। তিনি অভিযোগ করেন, “গত ১১ অক্টোবর শনিবার রাতে রাজাপুর উপজেলার শুক্তাগড় ইউনিয়নে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো বিনির্মাণের ৩১ দফা প্রচারাভিযান শেষে বাড়ি ফেরার পথে রাত সাড়ে ১২টার দিকে আমার গাড়িবহরের ওপর বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামালের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করা হয় এবং আমার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। হামলায় আমার ১০ জন কর্মী আহত হয়ে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।”
তিনি আরও বলেন, “রফিকুল ইসলাম জামাল সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত অমান্য করে দল থেকে বহিষ্কৃত রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নসিম উদ্দিন আকন এবং কাঁঠালিয়া উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন নিজাম মীরসহ আওয়ামী দোসরদের নিয়ে অসাংগঠনিকভাবে সভা-সমাবেশ পরিচালনা করছেন। তিনি এলাকায় বিভাজন সৃষ্টি করে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করছেন। এর আগেও তার নেতৃত্বে একাধিক সাংগঠনিক কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে।”
গোলাম আজম সৈকত হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, “আমি প্রশাসনের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি পাশাপাশি দলের পক্ষ থেকেও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।” সংবাদ সম্মেলনে রাজাপুর ও কাঁঠালিয়া বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, দুপুরে বাঘরী এলাকায় রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাসিম উদ্দিন আকনের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর–কাঁঠালিয়া) আসনের অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী রফিকুল ইসলাম জামাল।
তিনি বলেন, “গতকাল রাতে উপজেলার পুটিয়াখালী এলাকার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ আনা হয়েছে। আমার কোনো কর্মী হামলার সঙ্গে জড়িত নয়।
তিনি আরও বলেন, “আমি সবসময় সাংগঠনিক শৃঙ্খলার মধ্যে থেকে কাজ করছি। কেউ ব্যক্তিগত স্বার্থে দলের ভাবমূর্তি নষ্টের চেষ্টা করলে তার দায় দল নেবে না।” এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক (পদ স্থগিত) নাসিম উদ্দিন আকন, সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল হক নান্টু, যুবদলের আহবায়ক মাসুম বিল্লাহ পারভেজ, ছাত্রদলের আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন রাব্বি সিকদার, সদস্য সচিব রফিক মৃধাসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির এই অভ্যন্তরীণ বিভাজন দলটির মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে।
ছবি ক্যাপশনঃ ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ও সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা গোলাম আজম সৈকত।