বকশীগঞ্জ(জামালপুর)প্রতিনিধিঃ
জামালপুরের বকশীগঞ্জে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ ও জিঞ্জিরাম নদীর ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদী পাড়ের মানুষ। এতে করে উপজেলার সাধুরপাড়া ও মেরুরচর ইউনিয়নের পাঁচ গ্রামের বসত ভিটাসহ ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। নদী ভাঙন ঠেকাতে সরকারি কোন পদক্ষেপ না থাকায় ভুক্তভোগী মানুষ চরম হতাশায় দিন পার করছিল।
তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাসুদ রানা তার বদলি জনিত কারণে এসব অসহায় নদী পাড়ের মানুষের খোঁজ খবর না নিলেও নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহ জহুরুল হোসেন যোগদান করে প্রথমেই নদী ভাঙন এলাকা গুলো পরিদর্শন করেন ও নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় মানুষদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে তাদেরকে অতি দ্রুত নদী ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে আশ্বাস দেন। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ঢেউটিন ও পুনর্বাসনের আশ্বাস দেন।
এর পরেই ইউএনও শাহ জহুরুল হোসেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তার সাথে কথা বলে দ্রুত নদী ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। বর্তমানে এই দুই গ্রামে ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে। দ্রুত নদী পাড়ের কার্যক্রম শুরু করায় নদী পাড়ের মানুষ স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলছে।
নদী ভাঙন এলাকার আব্দুল মালেক জানান, নদী ভাঙনে আমরা নি:স্ব হয়ে গেছি, মাঝখানে কিছু দিন নদী ভাঙন বন্ধ ছিল গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে স্রোত বৃদ্ধি পাওয়ায় আবারও ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। ইতি মধ্যে জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙন রোধে কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া বাংগালপাড়া ২০০ মিটার ও কুতুবেরচর খেওয়া ঘাট ও কুতুবেরচর মিলে আরও ১৫০ মিটার মোট ৩৫০ মিটার ড্রাম্পিং এর প্রয়োজন কিন্তু মাত্র ১০০ মিটার কাজের অনুমোদন এসেছে। বাকি ২৫০ মিটার ড্রাম্পিং কাজের অনুমোদন অতিদ্রুত প্রয়োজন। নইলে বসতভিটা রক্ষা করা সম্ভব হবে না।
সাধুরপাড়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শেখ ফরিদ জানান, সাধুরপাড়া ইউনিয়নের বাংগালপাড়া ও কুতুবেরচর এলাকার মানুষ গত কয়েক বছর ধরে নদী ভাঙনের কারণে নি:স্ব হয়ে গেছে। নদী ভাঙনে সরকারি কোন পদক্ষেপ না থাকায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এসব নদী পাড়ের মানুষ। এবার নতুন ইউএনও মহোদয় এসে এলাকা পরিদর্শন করে নদী ভাঙনের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা ও তাদের বিপদে পাশে দাঁড়ানোর জন্য ইউএনও শাহ জহুরুল হোসেনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যসহকারী কর্মকর্তা নাজমুল হুদা বলেন, বর্তমানে যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা দিয়ে ১০০ মিটার ড্রাম্পিং এর কাজ করা যাবে এখানে আরও প্রায় ১০০ মিটার ও কুতুবেরচর ঘাট সহ কুতুবেরচর গ্রাম মিলে আরও ১৫০ মিটার মোট ২৫০ ড্রাম্পিং কাজের বরাদ্দ প্রয়োজন যা দিয়ে শুধু মাত্র বসতভিটা রক্ষা করা যাবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহ জহুরুল হোসেন জানান, আমি যোগদানের পরেই বকশীগঞ্জে প্রথমে নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করি এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সাথে কথা বলে তাদের চাওয়া পাওয়ার বিষয় গুলো আমলে নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে দ্রুত নদী ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। ইতোমধ্যে সাধুরপাড়া বাংগালপাড়া এলাকায় জিও ব্যাগ স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল ভাঙন কবলিত জায়গায় জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙন রোধ করা হবে।