নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক আহসান হাবিব ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার সকাল ছয়টার দিকে গুলশান-২ নম্বরের একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। পরে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।
সম্প্রতি আহসান হাবিব আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাদেরকে সহায়তা এবং সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে— প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ।
গুলশান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা আহসান হাবিবকে গ্রেফতারের পর আদালতে পাঠিয়েছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আগামীকাল আদালতে রিমান্ড আবেদন করা হবে।’
এর আগে একইদিন গভীর রাতে আহসান হাবিবকে গ্রেফতার করতে তার বাড়িতে যায় গুলশান থানা পুলিশ। এ সময় ‘ভুয়া পুলিশ’ তার বাড়িতে এসেছে—এমন ক্যাপশন দিয়ে ফেসবুকে লাইভে এসে জনমনে বিভ্রান্তি ও উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা করেন আহসান হাবিব। পরে তার নিকটাত্মীয় এবং স্থানীয়রা এসে নিশ্চিত হন—পুলিশের পোশাক পরা ব্যক্তিরা গুলশান থানারই পুলিশ; ভুয়া পুলিশ নয়। এরপর সকাল ছয়টার দিকে আওয়ামী লীগ নেতা আহসান হাবিবকে গ্রেফতার করে গুলশান থানায় নেওয়া হয়। পরে তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
জানা গেছে, আহসান হাবিবের বাবা এম এ সাত্তার ভূঁইয়া ধানমন্ডি থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নৌকা প্রতিকে নির্বাচনে করেন। তবে বিএনপির প্রার্থী বরকত উল্লাহ বুলুর কাছে ৩০ হাজার ৩২০ ভোটে হেরে যান। এম এ সাত্তার ঢাকার ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০০৭ সালের ৯ মে তিনি মারা যান।
গ্রেফতার আহসান হাবিব নিজেকে একজন আইনজীবী হিসেবে দাবি করেন। পাশাপাশি ‘পরিবর্তন করি ফাউন্ডেশন’-এর প্রতিষ্ঠাতা হিসেবেও পরিচয় দেন। তার সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ বিভিন্ন নেতার ছবি রয়েছে। একই সঙ্গে তিনি বিভিন্ন টেলিভিশন টকশোতেও অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রশংসা করতেন।
পুলিশ বলছে, গত বছরের ১৭ জুলাইয়ের পর থেকে আহসান হাবিব আচরণে পরিবর্তন আনেন। তিনি বুঝতে পারেন, আওয়ামী লীগের পতন হতে যাচ্ছে—এই ধারণা থেকেই তিনি তৎকালীন সরকারবিরোধী পোস্ট দেওয়া শুরু করেন। আওয়ামী লীগের এই নেতা চারটি বিয়ে করেছেন এবং আরও একটি বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলেও জানা গেছে।
সূত্র বলছে, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী আহসান হাবিবের বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন। পরে তিনি কৌশলে সেখান থেকে সরে যান।