

হোমনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:কুমিল্লার হোমনায় বিভিন্ন গ্রামীণ সড়ক ও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানের সোলার স্ট্রিট লাইটগুলো ১০ বছর আলো দেওয়ার কথা থাকলেও মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই তা নষ্ট হয়ে পড়ে। রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিকল্পনার অভাবে দিন দিন অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে বাতিগুলো। ফলে স্ট্রিট লাইট প্রকল্পের কাঙ্ক্ষিত সুফল পাচ্ছে না উপজেলাবাসী। বিভিন্ন সড়কে বসানো স্ট্রিট লাইট (সোলার লাইট) দীর্ঘদিন যাবত রক্ষণাবেক্ষণ না করার কারণে অকেজো হয়ে পড়েছে। অনেক জায়গায় খুঁটি থাকলেও লাইট গুলো চুরি হয়ে গেছে।এছাড়াও কোন কোন জায়গার খুটি গুলো ও চুরি করে নিয়ে গেছে। অনেক খুঁটিতে লাইট থাকলেও আলো জ্বলে না। প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এক প্রকার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে খুটিগুলো।
সড়কের বাতিগুলো নষ্ট হওয়ার কারণে রাতের অন্ধকারেই চলাচল করতে হচ্ছে গ্রামীণ জনপদের হাজার হাজার মানুষদের। রাতের আধাঁরে বাড়ছে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এসব স্ট্রিট লাইটে সৌরবিদ্যুতের প্যানেল আছে কিন্তু বাতি নেই। আবার কোথাও বাতি থাকলেও প্যানেল গায়েব। অনেক সড়কবাতি ব্যাটারি ও লাইটহীন। ব্যাটারির স্থানে পাখিরা বাসা বেধেছে। কখনো খোঁজখবর রাখেননি বা মেরামতের প্রয়োজনও বোধ করেনি কর্তৃপক্ষ। তিন বছর পর্যন্ত দেখভালের কথা থাকলেও ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো।
এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও কার্যকর কোনো ভূমিকা নেই। এ সব সোলার লাইটগুলোর বর্তমানে দেখভালের দায়িত্ব কার এমন প্রশ্ন এখন স্থানীয় সাধারণ মানুষের!
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির আওতায় টিআর-কাবিখা বরাদ্দের মাধ্যমে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৬টি, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ২০টি, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ১৩৩ টি, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ২০০টি। মোট সড়ক বাতি- ৩৫৯ টি স্থাপন করা হয়েছে। যার মূল্য-২, ৩৭, ৫৮, ১০৮ টাকা ধরা হয়। উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান রাস্তা মসজিদ মন্দির স্কুল কলেজ ও প্রতিষ্ঠানের সামনে পথচারীদের সুবিধার্থে এ স্ট্রিট সোলার গুলো স্থাপন করা হয়। কিন্তু মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই অধিকাংশই নষ্ট ও চুরি হয়ে গিয়েছে। ঠিক কতটি স্ট্রিট লাইট নষ্ট বা চুরি হয়ে গেছে এর সঠিক তথ্য নেই দপ্তরে।
স্থানীয় জনসাধারণ বলেন, সোলার প্যানেলের গুরুত্বপূর্ণ ল্যাম্পপোস্টগুলো অধিকাংশ নষ্ট ও চুরি হয়ে গেছে। যার ফলে গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলো আলোকিত থাকার পরিবর্তে অন্ধকারচ্ছন্ন হয়ে থাকে। এর ফলে নানা রকম দুর্ঘটনার পাশাপাশি চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই এর বাড়ার আশংকা করা হচ্ছে। এছাড়াও রাতে চলাচল করতে ও সমস্যায় পড়তে হয়। তাই অতিদ্রুত ল্যাম্পপোস্টগুলো মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ করা জরুরী।এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুঠোফোন বলেন, এই প্রকল্পটি বন্ধ রয়েছে। আর যেসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে লাইটগুলো স্থাপন করা হয়েছিল, তাদের চুক্তির মেয়াদ তিন বছর ছিল। চুক্তির মেয়াদ শেষের পর সৌর বাতিগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের জন্য কোনো বরাদ্দ না থাকায় এখন আপাতত কিছুই করা সম্ভব হচ্ছে না। বরাদ্দ পাওয়া সাপেক্ষে পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।