

জীবননগর অফিস : জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত ডাক্তার ও বিশেষজ্ঞ না থাকার কারণে সাধারণ মানুষ সঠিক চিকিৎসা পেতে সমস্যায় পড়ছে। মাত্র ৩-জন মেডিকেল অফিসার আর ৫-জন উপসহকারী মেডিকেল অফিসার দিয়ে চলছে এই বহল জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবা ফলে চিকিৎসা পেতে সাধারণ মানুষের ব্যাপক ভোগান্তি হচ্ছে।
তবে স্থানীয়রা বলছে, হাসপাতালের কিছু ডাক্তার নিয়মিত সরকারি সেবার বাইরে হাসপাতালের আশেপাশে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগীদের অর্থের বিনিময়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন। কেউ কেউ ফ্রিতে সেবা দিলেও নিয়মবিরোধী টেস্ট দেওয়ার কারনে রোগীদের জন্য বিভ্রান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাছাড়াও, প্রতিনিয়তই দেখা যায় পূর্বে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালন করা কিছু ডাক্তার তার বর্তমান কর্মরত এলাকায় সময় দেয়ার পরিবর্তে জীবননগর উপজেলায় ক্লিনিক বা স্বাস্থ্য কেন্দ্র খুলে সেখানে সময় দেন। এছাড়াও এসব স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে আশেপাশের জেলা, উপজেলার অন্যান্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তাররাও এই কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন।
এদিকে, জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কয়েক বছর আগে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যার ভবন করা হলেও পুরো জনবল ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এখনও যোগ করা হয়নি; ফলে রোগীদের যথেষ্ট সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
হাসপাতালের এক্স-রে যন্ত্র প্রায় ১৬ বছর ধরে বিকল হয়ে আছে; তাছাড়াও স্বাস্থ্যসেবার অনেক কার্যক্রম সচল নেই, এসব কারণে রোগীদের বাইরে গিয়ে পরীক্ষা-সহ বিভিন্ন সেবা নিতে হয়, ফলে সেবা নিতে আসা ব্যক্তিরা ভোগান্তিতে পড়ছে এবং এর ফলে খরচ বাড়ছে সেবা নিতে আসা রোগীদের।
তাছাড়াও শয্যার অভাব ও জনবলের কমতি-এর কারণে জরুরি, বহির্বিভাগ ও অন্তর্বিভাগ সবখানেই রোগীর ভিড় প্রতিনিয়তই থাকে; বেশ কিছু রোগীেদের মেঝেতে চিকিৎসা নিতেও দেখা যায়।
অনেক রোগী বলেন, ডাক্তাররা হাসপাতালের সময় রোগীদের দেখবেন বলে থাকে, কিন্তু ডাক্তার ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চলে গেলেই কখন আসবে জানে না। এসকল কারণে যারা দরিদ্র, তারা ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে পারছেন না বেশি টাকা লাগার কারণে, ফলে অপেক্ষা করতে হচ্ছে হাসপাতালের জন্য বা বিকল্প হিসেবে ক্লিনিকে যেতে হচ্ছে।
এছাড়াও, জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে রোগীর অবস্থা খারাপ হলে কখনো কখনো প্রাথমিক সেবা দিয়ে রোগীদের তাড়াহুড়ো করেই অন্য কোথাও চিকিৎসা নিতে বলা হয়, ফলে অনেক রোগী ভোগান্তির শিকার হয়। তাছাড়াও এসময় চিকিৎসা নিতে আসা ব্যক্তিরা সে সময় কি করবে সে ডিসিশন নিতে তাদের বিভ্রান্তিতে পড়তে দেখা যায়।
তবে এ বিষয়ে এলাকাবাসী বলছে,
জীবননগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও জনবল বাড়াতে হবে না হলে এখান থেকে সঠিকভাবে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়াও সকল ডাক্তারদের একত্রিত হয়ে আরো অন্তরঙ্গভাবে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার দাবি এলাকাবাসীর।
তাছাড়াও অনেকে বলেন, ডাক্তাররা চাইলে সরকারি হাসপাতালে আসল সেবা নিশ্চিত করতে পারতেন। কিন্তু ব্যক্তি ও বাণিজ্যিক স্বার্থে এই কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। সাধারণ মানুষের আশা, কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে সরকারি হাসপাতালে স্বচ্ছ ও নিরবচ্ছিন্ন চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করবে।