

নিজস্ব প্রতিবেদক,সকালের খবর
অবৈধ বিদ্যুৎ বিল আদায়,মাদক ও জুয়ার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে জড়িত থাকার অভিযোগে ফের আলোচনায় এসেছেন রূপনগর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক হারুনুর রশিদ ওরফে ‘বস্তি হারুন’। অভিযোগ রয়েছে, তিনি বস্তিবাসীর কাছ থেকে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ,গ্যাস ও পানির বিল আদায় করেন এবং বস্তি নিয়ন্ত্রণে কিশোর গ্যাং পরিচালনা করেন।
সম্প্রতি এক ভুক্তভোগীকে ফোনে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও হত্যার হুমকি দেওয়ার একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই অডিওতে হারুনকে বলতে শোনা যায়, “খানকির পোলা, খালি নির্বাচনটা যাক, পরে তোরে মাইরা ফেলমু। তোর মাইরে… করি।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, বস্তির প্রতিটি ঘর থেকে তিনি মাসিকভাবে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির নামে টাকা আদায় করেন। এ অর্থের সিংহভাগ তিনি নিয়মিতভাবে এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার কাছে পৌঁছে দেন। বস্তির ভেতরে জুয়া ও মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণেও তার সরাসরি ভূমিকা রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
হত্যার হুমকির বিষয়ে জানতে হারুনুর রশিদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি প্রথমে কল রিসিভ করেননি। পরে কল ব্যাক করে তিনি বলেন, “ভাইয়া, আমি রাগের মাথায় বলেছি। ওরা যদি টাকা ঠিকভাবে না দেয়, তাহলে আমি কি গায়ের রক্ত বেচে লাইন চালাবো?”
অভিযোগ রয়েছে, ঘটনার পর হারুন রূপনগর শিয়ালবাড়ী এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে সাংবাদিকের সঙ্গে বৈঠক করে বিষয়টি “ম্যানেজ” করারও চেষ্টা করেন। এ সময় তার কিশোর গ্যাংয়ের দুই সহযোগী উপস্থিত ছিলেন। তাদের একজন হুমকি দিয়ে বলেন, “এই সংবাদ হলে আমরাও মামলা করব—দেখা যাবে সমস্যা কী হয়।”
রূপনগর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রওশন বলেন, “বস্তি নিয়ন্ত্রণ করে সে—আমিও জানি। তবে তার ব্যক্তিগত অপরাধের দায় দল নেবে না। ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ দিলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দলের সদস্য সচিব টুটুল বলেন, “তার অপকর্মের দায় সংগঠন নেবে না। এখানে আমাদের অভিভাবক আমিনুল হক ভাই আছেন, তিনি যা সিদ্ধান্ত নেবেন তাই হবে। ভিডিওটা আমিও শুনেছি।”
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রশাসনের নীরবতা ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণেই বছরের পর বছর এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড চলতে পারছে। তারা দ্রুত তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।