1. alamgirhossen6085@sokalerkhobor24.com : alamgirhossen6085 :
  2. dinislam1144@sokalerkhobor24.com : Din Islam : Din Islam
  3. litonakter@sokalerkhobor24.com : litonakter :
  4. nalam.cht@sokalerkhobor24.com : nalam.cht :
  5. reporter1@sokalerkhobor.com : reporter1 :
  6. info@sokalerkhobor24.com : sokalerkhobor24 :
  7. admin@sokalerkhobor24.com : unikbd :
মাভাবিপ্রবির টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ল্যাবে তৈরি হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী জামদানী শাড়ি | সকালের খবর ২৪
রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ০১:৩৭ অপরাহ্ন

মাভাবিপ্রবির টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ল্যাবে তৈরি হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী জামদানী শাড়ি

  • প্রকাশিতঃ শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৬৪ বার পঠিত

ইমতিয়াজ আহমেদ ইমন,মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি :বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পোশাক জামদানী শাড়ি এবার তৈরি হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবেই। টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ নিজস্ব ল্যাব ও ওয়ার্কশপে তৈরি করেছে উচ্চমানসম্পন্ন জামদানী শাড়ি। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সম্মিলিত উদ্যোগে তৈরি এই শাড়ি এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্বের প্রতীকে পরিণত হয়েছে।

‎ঐতিহ্য ও প্রযুক্তির মেলবন্ধন বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, জামদানী কেবল একটি পোশাক নয়—এটি বাংলাদেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও জাতিসত্তার প্রতীক। নিজেদের ল্যাবে তৈরি জামদানী হাতে পাওয়া তাদের জন্য পরিশ্রম, ভালোবাসা ও আত্মমর্যাদার প্রতিফলন। প্রকল্পে যুক্ত এক শিক্ষার্থী বলেন, “নিজেদের তৈরি জামদানী পরা মানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্ব পরিধান করা।”

‎প্রকল্পের সমন্বয়কারী শিক্ষকরা জানান, এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য ছিল শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং শতাব্দীপ্রাচীন জামদানী শিল্পকে আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করা। ইউনেস্কোর স্বীকৃত ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পকে টেকসই ও আধুনিক রূপ দিতে শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করেছেন উন্নত যন্ত্রপাতি ও মাননিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি।




‎এই জামদানী শাড়িগুলো তৈরি হয়েছে বিভাগীয় ওয়ার্কশপে থাকা আধুনিক পাওয়ার লুম মেশিনে। প্রতিটি ডিজাইন নিখুঁতভাবে তৈরি ও ফিনিশিং করা হয়েছে । ব্যবহৃত হয়েছে শতভাগ বিশুদ্ধ কটন সুতা, যা জামদানীর ঐতিহ্যগত কোমলতা, জৌলুস ও সৌন্দর্য বজায় রেখেছে।

‎“ভাসানীর আদর্শের বাস্তব প্রয়োগ”

‎বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী বলেছিলেন—“খনিজ ব্যতীত বাকি সবকিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই তৈরি করবে।” টেক্সটাইল বিভাগের শিক্ষার্থীরা মনে করেন, জামদানী তৈরির এই উদ্যোগ ভাসানীর সেই স্বপ্নের বাস্তব প্রতিফলন। একজন শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা দেখাতে চেয়েছি, ভাসানীর শিক্ষা-স্বনির্ভরতার স্বপ্ন আজও বেঁচে আছে—শিক্ষার্থীরাই উৎপাদনের অংশ হতে পারে।”

‎মানে স্বাক্ষর, মূল্যে ন্যায্যতা

‎শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তাদের তৈরি জামদানীর মান বাজারে বিক্রিত অনেক শাড়ির চেয়ে উন্নত। প্রতিটি ধাপে কঠোরভাবে মাননিয়ন্ত্রণ (Quality Control) করা হয়েছে। প্রকল্পের সমন্বয়ক বলেন, “একই মানের শাড়ির দাম বাজারে অনেক বেশি। কিন্তু আমরা শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালোবাসা থেকে ন্যায্যমূল্যে দিচ্ছি।”

‎বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই জামদানী শাড়িগুলো এখন বিক্রয়ের জন্য উন্মুক্ত। প্রতিটি শাড়ির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে মাত্র ১,৭০০ টাকা। কর্তৃপক্ষ মনে করে, এটি শুধু একটি পণ্য নয়—বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য, প্রযুক্তি শিক্ষা ও আত্মনির্ভরতার প্রতীক।

‎শিক্ষায় উদ্ভাবনের দৃষ্টান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ল্যাব পরিদর্শন করে ল্যাবে তৈরিকৃত জামদানী শাড়ি তৈরির প্রক্রিয়া প্রত্যক্ষ করেন। তিনি এই উদ্যোগ ও সৃজনশীলতার প্রশংসা করে বলেন, এই প্রকল্প মাভাবিপ্রবির গৌরব এবং স্বনির্ভর শিক্ষার উজ্জ্বল উদাহরণ।টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ল্যাবে ঐতিহ্যবাহী জামদানী শাড়ি তৈরি হচ্ছে। এটি মূলত মজলুম জননেতা ভাসানীর স্বনির্ভর শিক্ষানীতির বাস্তব প্রতিফলন। তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের, যেখানে শিক্ষার্থীরা লবণ ও কেরোসিন তেল ছাড়া বাকি সবকিছু নিজেরাই উৎপাদন করবে। আমরা আনন্দিত যে, সেই স্বপ্ন কিছুটা হলেও বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।”

‎তিনি আরও বলেন, “জামদানির মতো ঐতিহ্যবাহী শিল্পকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার সঙ্গে যুক্ত করা শিক্ষার্থীদের তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞানের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিভাগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-নির্ভর উন্নত প্রযুক্তি সংযোজনের পরিকল্পনা রয়েছে। কর্তৃপক্ষের সহায়তা পেলে শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে বাংলাদেশের পোশাকশিল্পকে আরও এগিয়ে নিতে আমরা সক্ষম হব।”

‎এই উদ্যোগের মাধ্যমে মাভাবিপ্রবির টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ প্রমাণ করেছে—শিক্ষা শুধু শ্রেণিকক্ষের সীমাবদ্ধ নয়। ঐতিহ্য, দক্ষতা ও প্রযুক্তির সংমিশ্রণে তৈরি এই জামদানী শাড়ি এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্ব, শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতার প্রতীক এবং বাংলাদেশের ঐতিহ্যের নবযাত্রার এক অনন্য নিদর্শন।

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© 2025 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। সকালের খবর ২৪ | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি ।
Developed By UNIK BD