

জহিরুল ইসলাম ঝিকরগাছা যশোর প্রতিনিধি: দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারী ফুলের বাজার ‘ফুলের রাজধানীখ্যাত’ ঝিকরগাছার গদখালীতে নতুন ফুলের বাজারের শুভ উদ্বোধন হয়েছে। সোমবার সকালে এ ফুল বাজারের শুভ উদ্বোধন করেন সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা কিশোর কুমার সাহা। ক্রেতা-বিক্রেতা ও সাধারণ মানুষ নতুন বাজার পরিদর্শনে এসে স্বস্তির পাশাপাশি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। দীর্ঘদিন যশোর বেনাপোল মহাসড়কের দুপাশে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফুল বেচাকেনা করতেন ফুল চাষিরা।
যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক ছেড়ে ফুলের বাজার নির্ধারিত স্থানে মনোরম পরিবেশে স্থানান্তরিত হওয়ায় সম্ভাব্য দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব হয়েছে। ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভুপালি সরকারের উদ্যোগের সফল বাস্তবায়ন প্রশংসিত হয়েছে। সরজমিনে দেখা যায় ভোর থেকে নতুন ফুলের বাজারে ফুল ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতি। উপজেলার গ্রামীণ জনপদের দূরদুরান্ত থেকে ফুল চাষীদের পাশাপাশি ফুলের পাইকাররা দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহর থেকে ফুল বিকিকিনিতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফুল বাজারে এসে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
নতুন ফুলের বাজারের ক্রেতা বিক্রেতাদের সুবিধার্থে অবিলম্বে একটি বাইপাস লেনসহ সেড নির্মাণের পাশাপাশি গণশৌচাগার নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন ফুল চাষী ও ফুল ব্যবসায়ীরা। ঝিকরগাছা পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাভিদ সারওয়ারের কাছে তারা দাবি তুলে ধরেন। সহকারি কমিশনার (ভূমি) তাদের যৌক্তিক দাবীর প্রতি সমর্থন জানিয়ে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা কিশোর কুমার সাহা সহকারী কমিশনার (ভূমি)র সাথে সহমত প্রকাশ করেছেন।
গদখালী ফুলচাষী ও ফুল ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফরসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, ফুল চাষী ও ফুল ব্যবসায়ীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।উল্লেখ্য, ফুলের রাজধানীখ্যাত গদখালি, নাভারন, পানিসারা ও মাগুরা ইউনিয়নের একাংশ বাণিজ্যিক ফুলচাষের জন্য খ্যাতি অর্জন করেছে। দেশের বৃহত্তম ফুল উৎপাদক যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার উৎপাদিত মানসম্মত ফুল বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহরে প্রতিদিনই সরবরাহ হয়। দেশের মোট চাহিদার সিংহভাগ ফুল সরবরাহ হয় গদখালী থেকে।
এখানকার উৎপাদিত ফুল ইউরোপের পাঁচটি দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। রংবেরঙের গোলাপ, গ্লাডিউলাস, জারবেরা, রজনীগন্ধাসহ নানা জাতের ফুল রপ্তানি হয়ে থাকে। ফুল উৎপাদন, বিপণন ও রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছেন এই গ্রামীণ জনপদের ফুল চাষিরা। নিজেরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক শ্রমজীবী, কৃষিজীবী পরিবার ও জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান ফুল চাষে। ফুলের উৎপাদন মৌসুম শুরু। এ জনপদের ফুল চাষীদের নাওয়া খাওয়ার ফুরসৎ নাই, দিনরাত ফুলের ক্ষেত পরিচর্যার পাশাপাশি নতুন বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার ফুল চাষীরা।