

সাইদ সাজু, তানোর থেকে : গত দুই দিনের টানা বর্ষনে ডুবে গেছে নিন্মঅঞ্চলে নির্মান করা বঙ্গবন্ধুর উপহারের প্রায় সব গুলো বাড়ি। একই সাথে ভেঙ্গে গেছে অর্ধ শতাধীক মাটির বাড়ি। অপর দিকে পাঁকা ধান ডুবে যাওয়ার পাশাপাশি ভেষে গেছে বেশ কিছু পুকুরের মাছ। তানোর থানার মোড়সহ বিভিন্ন এলাকার বেশ কিছু রাস্তাও ডুবে যায় পানিতে। ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃসকসহ সাধারণ মানুষ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়ি পড়েছে বিভিন্ন এলাকার এমন ছবি ও ভিডিও। অপর দিকে ডুবে যাওয়া এসব এলাকায় মাছ ধরার ভিডিও অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করার পাশাপাশি এমন বন্যার দৃশ্য দেখতে উৎসুক জনতাকে দেখা গেছে এমন দৃশ্য ভিডিও করে ছড়িয়ে দিতে।
কলমা ইউপির কুচিয়া মোড়া, নড়িয়াল, বাধাইড় ইউপির ধামধুম, পাঁচন্দর ইউপির বনকেশর ব্রীজ ঘাট, মোহাম্মদপুর কাজী জিয়া, কামারগাঁ ইউপি মাড়িয়া, বাতাসপুর, তানোর ও মুন্ডমালা পৌর সভাসহ তানোর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার নিম্ন এলাকা প্রায় রাস্তাঘাট ও পুকুর ডুবা ধানের জমিসহ প্লাবিত হয়ে টানা বৃষ্টির পানিতে। বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, বঙ্গবন্ধুর উপহারের প্রায় সব গুলো বাড়িই ডুবে গেছে পানিতে। ওই বাড়িগুলোর প্রায় সব গুলোই নিম্ন এলাকায় হওয়ায় প্রায় সব গুলো বাড়ি এখন পানির নিচে। অপর দিকে নিম্ন এলাকার মাটির বাড়ি গুলো ভেঙ্গে পড়েছে। জমিতে পানি জমে থাকায় পাঁকা ধান ডুবে আছে পানির নিচে।
কৃষকরা বলছেন, দুই দিনের টানা বর্ষনে রোপা আমনের পাকা ধানের জমিতে হাটু পরিমান পানি জমে রয়েছে। জমি থেকে পানি নামছে খুব ধীর গতিতে। জমির পানি নেমে দ্রুত নেমে না গেলে ধান পচে যাওয়ার পাশাপাশি ট্যাকিয়ে ধান নষ্ট হয়ে যাবে। অপর দিকে এলাকার ভেঙ্গে যাওয়া মাটির বাড়ির মালিকরা বলছেন, হঠাৎ টানা বর্ষনে খাল নিয়ে পানি নামতে না পারায় পাড়া মহল্লা ও পাঁকা রাস্তার উপর দিয়ে পানির স্লোত গেছে এই স্রোতে মাটির বাড়ি গুলো ভেঙ্গে পড়েছে। একই কথা বলছেন, মৎস্য চাষরা, তারা বলছেন হঠাৎ টানা বর্ষনে কিছু বুঝে উটার আগেই পুকুরে পানি ডুকে ভেষে গেছে পুকুর ও পুকুরের মাছ। এতে করে তানোর উপজেলার কৃষকসহ মৎস্য চাষী ও সাধারন মানুষ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। পানিতে ডুবে যাওয়া রাস্তাগুলো ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
একই সাথে বিভিন্ন এলাকায় গাছ ও ডালপালাসহ খুটি উপড়ে পড়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ সাময়িক ভাবে বন্ধ ছিলো। ডিস সার্ভিস সেন্টার রুমে পানি ডুকে ও তার ছিড়ে পড়ায় ডিস লাইন বন্ধ রয়েছে। বঙ্গবন্ধু বন্ধুর পাড়িতে থাকা লোকজন মানবেতর জীবনযাপন করছে এমন খবরও পাওযা গেছে। সব মিলিয়ে গত দুই দিনের টানা বর্ষনে তানোর উপজেলার প্রায় প্রতিটি এলাকার রোপা আমন ধান, পুকুরের মাছ ও ঘরবাড়িরসহ রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কৃষকরা বলছেন, জমিতে ধান পেকে ছিলো দু েকদিনের মধ্যেই কাটা শুরু হত। কিন্তু রোপা আমন ধানের জমিতে পানি জমে থাকায় ধান কাটতে দেরি হওয়ার পাশাপাশি আলু রোপনো পিছিয়ে পড়বে।
তানোর উপজেলা মৎস্য সহকারী কর্মকর্তা হাজিজুর রহমান জানান, হঠাৎ করে একদিনের টানা বর্ষণে তানোর উপজেলা জুড়ে প্রায় শতাধিক পুকুর ডুবে ভেসে গেছে। তবে মাছ চাষিদের কেমন ক্ষতি হয়েছে তা নির্দিষ্ট ভাবে জানাতে পারেনি মৎস্য অফিস কর্তৃপক্ষ। তানোর উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহ আহমেদ বলেন, যদি সোমবারের মধ্যে জমি থেকে পানি নেমে যায় তাহলে রোপা আপন ধানের তেমন ক্ষতি হবে না। এরপরও যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে ক্ষতি হবে। তিনি বলেন এখনো ক্সতির পরিমান নির্ধারণ করা হয়নি,সোমবারের পর মাঠ ঘুরে ক্ষতির পরিমান নির্ধারণ করা হবে কত পার্সেন্ট ক্ষতি হবে। তবে, আলু রোপন পিছিয়ে যাবে বলেও জানান এই কৃষিবিদ। তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাইমা খান বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে তার পর সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, জরুরী ভিত্তিতে কেউ সাহায্য ও সহায়তার কথা জানায়নি, জানালে সহায়তা ব্যবস্থা করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমি ট্রেনিং এ আছি মঙ্গলবার তানোরে ফিরবো ফিরে খোঁজ খবর নিয়ে সাধ্যমত সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান তিনি।