

নিজস্ব প্রতিবেদক,সকালের খবর
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা এখন কার্যত বিএনপির দুই গ্রুপের ক্ষমতা প্রদর্শনের অঙ্গনে পরিণত হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার একই দিনে দুটি বিপরীত কর্মসূচি ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে পুরো উপজেলা জুড়ে। একদিকে ফরিদপুর-১ আসনের বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী খন্দকার নাসিরুল ইসলাম নাসিরের অনুসারীরা নবগঠিত উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটিকে জাঁকজমক সংবর্ধনা ও আনন্দ মিছিল দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। অন্যদিকে একই আসনের আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর নেতৃত্বাধীন গ্রুপ কমিটি বাতিলের দাবিতে অর্ধদিবস হরতালের ঘোষণা দিয়েছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি উপজেলা ও পৌর বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণার পর থেকেই আলফাডাঙ্গা বিএনপির মধ্যে বিভাজন চূড়ান্ত আকার ধারণ করে। ঘোষণার পর থেকে ঝুনু মিয়া গ্রুপের পক্ষ থেকে একাধিক বিক্ষোভ, মশাল মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারা অভিযোগ করছে, “এই কমিটি আওয়ামী লীগপন্থী ও অচেনা লোকদের দিয়ে গঠিত হয়েছে, আর ত্যাগী নেতাকর্মীদের বঞ্চিত করা হয়েছে।”
অপরদিকে নাসির গ্রুপ দাবি করছে, “এই কমিটি দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে অনুমোদিত, যারা বিরোধিতা করছে তারা আসলে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যস্ত।”
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে তারা নিজেদের “দলের বৈধ নেতৃত্ব” প্রমাণে মরিয়া।
এই পাল্টাপাল্টি অবস্থানকে ঘিরে আলফাডাঙ্গায় রাজনৈতিক উত্তেজনা তুঙ্গে উঠেছে। প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে আছে বলে জানা গেছে।
এদিকে বিএনপির এই অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ স্পষ্ট।
স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, “নেতারা এখন শুধু নিজেদের ক্ষমতা দেখাতে ব্যস্ত। হরতাল-সংবর্ধনার রাজনীতিতে ক্ষতি হচ্ছে সাধারণ মানুষেরই।”
এক তরুণ কর্মী হতাশ হয়ে বলেন, “যে দলে এখন নিজেরাই নিজেদের বিরুদ্ধে মিছিল করে, তারা কীভাবে এই আসনে জয়লাভ করবে?”
এক শিক্ষক মন্তব্য করেন, “আলফাডাঙ্গার বিএনপি এখন জনগণের নয়, ব্যক্তির দলে পরিণত হয়েছে। দল নয়, মনোনয়নই এখন তাদের রাজনীতির মূল কেন্দ্র।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ২৩ অক্টোবর ঘোষিত বিতর্কিত কমিটিকে ঘিরে বিএনপির এই বিভাজন শুধু আলফাডাঙ্গা নয়, পুরো ফরিদপুর-১ আসনে দলের সাংগঠনিক ভিত্তিকে দুর্বল করছে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে এই বিভক্তি বিএনপির জন্য বড় রাজনৈতিক ক্ষতির কারণ হতে পারে।