

কুয়েল ইসলাম সিহাত, বোদা (পঞ্চগড়) প্রতনিধিঃ বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ও পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলহাজ্ব ফরহাদ হোসেন আজাদ বলেছেন, আগে জামায়াত ছিল আওয়ামী লীগের লুঙ্গির নিচে, এখন আওয়ামী লীগ জামায়াতের লুঙ্গির নিচে। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। সেখানে বিএনপির উলামা দলকে দিয়ে ধর্ম ব্যবসায়ী জামায়াতে ইসলামীকে মোকাবেলা করতে হবে।
তিনি শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পঞ্চগড়ের বোদা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে জাতীয়তাবাদী উলামা দলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, নীল নদের পানি যেমন নীল নয়, তেমনি জামায়াতে ইসলামী মানে ইসলাম নয়। ইসলাম হচ্ছে মক্কা-মদিনার ইসলাম, হজরত মোহাম্মদ (সা.) ইসলাম, কোরআনের ইসলাম। ওদের অপকর্ম থেকে জনগণকে সতর্ক করতে হবে। মসজিদে তারা মিটিং করে মিথ্যা প্রচার করছে। তাদের একটা মার্কা আছে, তাদের মার্কায় ভোট দিলে নাকি জান্নাতে যাওয়া যাবে। আমার প্রশ্ন মসজিদে রাজনৈতিক দলের প্রোগ্রাম কেন, প্রশ্ন করলেই বলা হবে এটা তো ইসলামী দল। একই সাথে রাজনীতি আর ইসলামের বন্দোবস্ত থাকায় জামায়াত বা অন্যান্য ইসলামী দলগুলো কি একটা সুবিধা নিচ্ছে না? তাহলে রাজনীতিতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডটা কিভাবে নিশ্চিত হবে? অন্য দলগুলো মসজিদে এমন প্রোগ্রাম করলে মেনে নেওয়া হবে? হবে কী না।ফরহাদ হোসেন আজাদ বলেন, ফ্যাসিষ্ট হাসিনার পতন হয়েছে। এখন হাট-বাজারে, মাঠে ময়দানে, দলের কাজ করেন, ভোটের কাজ করেন, সভা সমাবেশ করেন, কোন আপত্তি নেই আমাদের, কিন্তু আপনারা মসজিদে দলের কথা, ভোটের কথা বলবেন এটা মেনে নিব না। কোন দল যেন মসজিদে দলের কথা বলতে না পারে এজন্য তিনি উলামাদের প্রতি আহবান জানান।তিনি আরও বলেন, জামায়াত একটা মুনাফেক দল। মসজিদে যদি জামায়াতে ইসলামী কোনো মিটিং করে তাহলে উলামা দলের নেতাকর্মীদের দিয়ে তাৎক্ষণিক তাদের প্রতিহত করতে হবে। সেই জায়গায় বিএনপির সব পর্যায়ের লোকজন সাপোর্ট করবে।
বোদা উপজেলা উলামা দলের আহবায়ক মাওলানা হকিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে তিনি বলেন, ওয়াজ মাহফিলের কথা বলে পাড়ায় মহল্লায় সকল দলের সমর্থকদের নিকট থেকে চাঁদা তুলে ওয়াজের নামে, ইসলামের নামে, ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ওই দলটি দলের কাজ করে। ইসলামের তকমা লাগা এই দলটির কথা বিশ্বাস করবেন না। তারা গ্রামের কোমলমতি যুবক ভাই ও মা বোনদের তালিমের নামে ভুল বুঝিয়ে, বেহেস্তের কথা বলে দাঁড়িপাল্লায় ভোট চাচ্ছে। এদের এই প্রচেষ্টা প্রতিহত করতে হবে।তিনি আরো বলেন, জামায়াতে ইসলামী ভোট চেয়েছিল, তারা দেশের সব আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে, বর্তমান সরকার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে আগামী ফেব্রুয়ারীতে সরকার ভোটের ঘোষণা দিয়েছেন। এই দলটির প্রতি জনসমর্থন কমে যাওয়ায়, এখন তারা ষড়যন্ত্র করে পিআর পদ্ধতিতে ভোট চাচ্ছে।এই দলটির প্রতি জনসমর্থন কমে যাওয়ায়, এখন তারা ষড়যন্ত্র করে পিআর পদ্ধতিতে ভোট চাচ্ছে।এদের কোথায় বিশ্বাস না করার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উলামা দলের বোদা উপজেলা শাখার সদস্য সচিব মাওলানা ইসাহাক আলী, জেলা কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম, বোদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ আসাদ, পৌর বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুর রহমান আরিফ, আব্দুল্লাহ আল মারুফ অনু সহ বিএনপির নেতৃবৃন্দ। এ সময় বোদা উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের উলামা দলের বিপুল সংখ্যক নেতা কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান মুসলিম আলেমদের নিয়ে ১৯৭৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী উলামা দল প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে, মাওলানাদের নিয়ে উলামা দলের প্রথম সম্মেলন হলে এস এম রুহুল আমিনকে সভাপতি এবং মোয়াজ্জেম হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
কেন্দ্রীয় কমিটিঃ১৭১-সদস্যের কমিটি ৫ এপ্রিল ২০১৯ সালে গঠিত হয় এবং তারপর ২৬ এপ্রিল ২০২৪-এ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের অনুমোদনে একটি নতুন আংশিক স্থায়ী কমিটি গঠিত হয় এবং ২০২৪ সালের জুলাই মাসে আরেকটি কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে মাওলানাদের এবং ধর্মীয় পণ্ডিত সহ ১৩৭ জন সদস্য রয়েছে।