

স্টাফ রিপোর্টার: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ প্রায় গুছিয়ে এনেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্প্রতি যশোরের ছয়টি সংসদীয় আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি এককভাবে ‘ধানের শীষ’ প্রতীককে বিজয়ী করতে সম্মিলিতভাবে কাজ করার কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন।দলীয় সূত্র মতে, তারেক রহমানের এই নির্দেশনা বৈঠকে উপস্থিত সকল সম্ভাব্য প্রার্থী মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
মনোনয়ন নীতি ও তারেক রহমানের বার্তা: সূত্র জানিয়েছে, যশোরের মোট ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটি আসনেই বিগত দিনের ‘রাজপথের লড়াকু’ এবং তৃণমূলের পরীক্ষিত নেতাদের ‘ধানের শীষ’ প্রতীক দেওয়া হবে। তবে যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনটি ব্যতিক্রম। এই আসন থেকে তরুণ প্রজন্মের নেতা, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণকে দল বেছে নিচ্ছে বলে জানা গেছে।বিএনপির গুলশান অফিসের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, যদিও এটি তারেক রহমানের ‘চূড়ান্ত ঘোষণা’ নয়, তবুও এই দলীয় সিদ্ধান্ত প্রায় শতভাগের নব্বই ভাগই সঠিক। তবে, এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে কিছু এমপি পদপ্রার্থীর মধ্যে মন খারাপের খবর পাওয়া গেলেও, তারেক রহমান তাদের সবাইকে মন খারাপ না করে দলের বৃহত্তর স্বার্থে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
যশোরের ৬টি আসনে ‘গুড বুকে’ থাকা সম্ভাব্য প্রার্থীরা: তারেক রহমানের বিশেষ নজর এবং আলোচনায় অগ্রগামী থাকা প্রার্থীরা হলেন: যশোর-১ (শার্শা): মফিকুল হাসান তৃপ্তি,সাবেক কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ও সাবেক এমপি। যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা): সাবিরা নাজমুল মুন্নি।এই আসন থেকে মনোনয়ন আলোচনায় তিনি এগিয়ে। যশোর-৩ (সদর):অনিন্দ্য ইসলাম অমিত সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের ছেলে, বিএনপির কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক। তৃণমূলের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় তিনি নেতাকর্মীদের কাছে চূড়ান্ত প্রার্থী। যশোর-৪ (অভয়নগর-বাঘারপাড়া ও বসুন্দিয়া ইউনিয়ন): ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও কৃষক দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। যশোর-৫ (মণিরামপুর): শহীদ ইকবাল হোসেন,এডভোকেট সাবিরুল হক সাবু,ইকবাল হোসেন উপজেলা কমিটির সভাপতি হলেও, জেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট সাবিরুল হক সাবুও জোর আলোচনায় রয়েছেন। যশোর-৬ (কেশবপুর): কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ,কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য। তরুণ নেতা হিসেবে তাকে দল বেছে নিচ্ছে।
আলোচনায় থাকা অন্যান্য প্রার্থীরা: যশোর-১ আসনে মফিকুল হাসান তৃপ্তির পাশাপাশি উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হাসান জহির আলোচনায় রয়েছেন। অন্যদিকে, যশোর-৪ আসনে ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব ছাড়াও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সমন্বয়ক ও সরকারি অ্যাটর্নি জেনারেল নুরে আলম সিদ্দিকী সোহাগও আলোচনায় আছেন।যশোর-৩ আসনটি বিএনপির জন্য ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই আসনে সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের মতো হেভিওয়েট প্রার্থীরা কাণ্ডারি ছিলেন। এখন সেই আসনে তার ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিতই নতুন প্রজন্মের নেতা হিসেবে হাল ধরেছেন।বিএনপির হাইকমান্ডের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে স্পষ্ট, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যশোর জেলায় দলীয় কোন্দল নিরসন করে একক প্রার্থী দিয়ে জয়ের পাল্লা ভারী করার চেষ্টা চলছে।